বাদুর সম্পর্কে অজানা তথ্য -ঘন্টায় প্রায় ৬০০ পোকা খেতে পারে



বাদুড় হওয়া এত সহজ নয়। পা উপরে এবং মাথা নিচে দিয়ে ঘুমানো ও উল্টো করে পৃথিবী দেখা সবার পক্ষেই সম্ভব না। সেই সাথে বিশ্রাম, মেলামেশা এবং স্তন্যদান ও প্রসবের কাজও এভাবেই হয়ে থাকে। পৃথিবীতে প্রায় ১১০০ প্রজাতির বাদুড় রয়েছে।

কিন্তু মানুষ বা অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মত এদের শীরা পাতলা নয়। বরং ধমনীর মতো শক্ত। তাই উল্টে ঝুলে থাকলেও মাথায় রক্ত প্রবাহ বাড়ে না। স্তন্যপায়ীদের মধ্যে এরাই সবচেয়ে বড় প্রজাতি। যা প্রায় হাজারের ওপর। প্রাণীটিকে ভীতিকর বলে মনে করা হয় আবার চামচিকে বলে অবজ্ঞাও করা হয়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই প্রাণীটির উপকারিতা আমরা অনেকেই জানিনা।-Facts About Bats

জেনে নেয়া যাক এর উপকারিতা সম্পর্কে চমকপ্রদো কিছু তথ্য। প্রায় ৩০০ ফলের পরাগায়ন বীজের স্থানান্তর এবং ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে আমাদের পরিবেশ বসবাস উপযোগী করে রাখে এই বাদুড়। মরুভূমির মতো পরিবেশে যেখানে পাখি কম সেখানে পরাগায়নের জন্য বাদুরই একমাত্র ভরসা।

কলা আম প্রভৃতি ফলের পরাগায়ন বাদুড় ছাড়া অসম্ভব। ডুমুর বটফল ও বাদাম বীজের স্থানান্তর ও বনায়ন এ এই বাঁদরের অবদান অনেক বেশি। কৃষক রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমালেও তাদের খেতের পোকামাকড় খেয়ে ফসল রক্ষা করে এই বাদুড়। বাদুড় এক ঘন্টায় প্রায় ৬০০ পোকা খেতে পারে। রাতের আকাশে বাদুরই একমাত্র নায়ক।

বাদুর মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে। মেগা বার্ড বা বড় বাদুরগুলো গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের। বিস্তারিত পাখা সহ এরা ৬ ফুট হয়ে থাকে। এরা ফল খায় এবং গাছের কোটরে বাসা বাঁধে। এরা চোখেও ভালো দেখে। কিন্তু ছোট বাদুর গুলো শীত অঞ্চলের। অন্ধকার পাহাড়ের গুহায় বাস করে বলে এদের দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়।

মাইক্রো বার্ড বা শীত অঞ্চলের বাহাদুর গুলো অন্ধকারে ত্রিমাত্রিক ইকোলুশন প্রযুক্তির সাহায্যে সোশ্যাল কল করবার সময় সংঘর্ষ এড়ানো, শিকারের অবস্থান নির্ণয় করে। তবে ইকো লোকেশন এর পরিধি খুব বেশি নয়।

কেবল তিন প্রজাতির বাদর রক্ত পান করে থাকে। ও হামাগুড়ি দিতে জানে। এরা গবাদি পশুর শরীরে রক্ত খায়। দাঁত দিয়ে ফুটো করে জিভ দিয়ে চেটে খায়। চুষে পান করার উপযোগী মুখ তাদের নেই। কিন্তু এসব বাদুরের অধিকাংশ প্রজাতি এখন বিলুপ্তির পথে।

চীনে বাদুরকে “ফু” বলা হয়। ফু মানে ফরচুইন। চীন এবং জাপানে একে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবেও ধরা হয়।

ওড়ার জন্য এদের প্রচুর অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। তাই এদের হার্ট মিনিটে ১ হাজার বারের মতো স্পন্দিত হয়। আবার শীত নিদ্রার সময় শক্তি সঞ্চয়ের জন্য স্পন্দন মিনিটে ২০ বারে নেমে আসে।

বাদুড়ের মলে প্রচুর নাইট্রোজেন রয়েছে। গান পাউডার হিসেবে ও উঁচু মানের জৈব সার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। বাদুরের গুহা থেকে সংগৃহীত জৈব সার তেল আবিষ্কার এর জন্য খুবই উপযোগী। বন্দুকবাজ আমেরিকায় অন্যতম দামি খনিজ ছিল এই বাদুরের পরিত্যক্ত মল।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!